Profile
>
Post by মোর্শেদ
মোর্শেদ আলম

মোর্শেদ আলম

ব্যক্তিগত

Cox’s Bāzār, Cox's Bazar

ইসলামে মুহাম্মাদ/ইসলামের ইতিহাস

  মুহাম্মাদ ইসলাম ধর্মের প্রচারক। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী তিনি আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ নবি ও রাসুল এবং তার উপরই কুরআন প্রেরিত হয়েছিল। মুসলিমরা বিশ্বাস করে দাউদ, মুসা, ইসা সহ অন্যান্য নবি-রাসুলের পর মুহাম্মদ সর্বশেষ নবী ও রাসুল। তার আদর্শের ভিত্তিতেই ইসলামিক সভ্যতা গড়ে ওঠে।

মুসলিমরা তাকে নবী, রাসুল এবং মোহাম্মদ বলে সম্বোধন করে থাকে। এবং তাকে সকল মানবীয় গুনের অধিকারী বলে বিশ্বাস করে। মুসলিমরা তার নামের শেষে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাহু - তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক, সংক্ষেপে সা.)উচ্চারণ করে। মুহাম্মদের দৈনন্দিন কর্মগুলোকে সুন্নাহ বলা হয়। তিনি যা যা করার আদেশ ও উপদেশ, নিষেধ করেছেন, তাকে হাদিস বলা হয়ে থাকে। ইসলাম ধর্মে কুরআনের পরই হাদিসের স্থান। এটি প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অনুকরণীয়, কোন কোন বিষয় অবশ্যই পালনীয়।

 

হেরা গুহা: এই গুহায় ধ্যানরতঃ অবস্থায় মুহাম্মদ -এর উপর প্রথম কুরআন নাযিল হয়।

মুহাম্মদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন প্রত্যেক মুসলমানের প্রতি আল্লাহর আদেশ। ইসলাম এর মূলবাক্যের প্রথমাংশে আল্লাহর অস্তিত্ব ও দ্বিতীয়াংশে মুহাম্মাদ এর প্রতি ইমান আনার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ মুহাম্মদের প্রতি বিশ্বাস না আনলে কেউ মুসলিম হতে পারে না। ইসলামে একে রিসালাত (আরবি-رِسَلَث) বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে

মুহাম্মাদ এর জন্ম ৫৭০ খ্রীস্টাব্দের ১২ই রবিউল আউয়াল মাসে মক্কার সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে। জন্মের পূর্বেই তার পিতা আব্দুল্লাহ মারা যান। তার মায়ের নাম আমিনা। তিনি শৈশবে আল-আমিন (الُ امِن- বিশ্বস্ত) উপাধি লাভ করেন। ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে মুহাম্মদ হেরা গুহায় নবুয়ত লাভ করেন। আল্লাহর নির্দেশে হযরত জিবরাঈল মুহাম্মদের কাছে আল কুরআনের ৫ টি আয়াত নিয়ে আসেন  আয়াতগুলো ছিল কুরআনের ৯৬তম সূরা "আল-আলাক"- এর।

পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন

সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।

পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহান দয়ালু নামে,

যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন,

শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে, যা সে জানত না।

সূরা আল-আলাক, আয়াত ১-৫

ইসলাম প্রচার, হিজরত, ইসলামের জন্য যুদ্ধ এবং মক্কা বিজয়

ইসলাম প্রচার ও মদিনায় হিজরত

নবুয়্যত লাভের পর প্রথমে নিকটাত্মীয়দের কাছে ইসলামের দাওয়াত দেন মুহাম্মদ। সর্বপ্রথম মুহাম্মদ এর স্ত্রী খাদিজা ইসলাম গ্রহণ করেন। এরপর মুহাম্মদ আল্লাহর নির্দেশে মক্কায় সরাসরি ইসলাম প্রচার শুরু করেন। কিন্তু তৎকালীন মক্কাবাসীরা এই নতুন ধর্মকে মেনে নিতে পারেনি। তারা মুহাম্মদ ও তার অনুসারীদের প্রতি নির্যাতন শুরু করে। তাই আল্লাহর নির্দেশে মুহাম্মদ ও তার অনুসারীরা মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। এই হিজরতইক আরবী বর্ষপঞ্জীর (হিজরি) ভিত্তি। এটি ছিল মুহাম্মদের এর জীবনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা। মদিনায় মুহাম্মদ ও তার সহচররা পূর্ণ উদ্দমে ইসলাম প্রচার শুরু করেন।

মদিনায় শান্তি আনয়ন

মুহাম্মদ এর মদিনায় গমনের পর মদিনাবাসী কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে যায়-

  1. মুসলিম: মক্কা থেকে আসা মুসলমান এবং মদিনার আনসার।
  2. বানু আউস এবং বনু খাজারাজ গোত্র; বস্তুত মুশরিক হলেও ইসলামের সহকারী
  3. ইহুদি: তৎকালীন মদিনার বৃহত্তর ধর্মগোষ্ঠী
  4. নামে ইসলামের সহকারী হলেও বস্তুত ইসলামবিরোধী।

ভিন্নধর্মী মানুষের মধ্যে শান্ত্বি স্থাপনের লক্ষ্যে মুহাম্মদ মদিনার নানা শ্রেনীর নেতাদের একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের আহ্বান জানান। এটি ছিল ঐতিহাসিক মদিনার সনদ এই সনদ মদিনার মুসলিম-ইহুদি এবং বহিঃগত শত্রুদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়। এটি ছিল বিশ্বের সর্বপ্রথম লিখিত চুক্তিএটি ছিল তৎকালীন সময়ের অন্যতম ফলপ্রসূ চুক্তি। এটি মদিনাবাসীদের শান্তি স্থাপনে অপরিসীম ভূমিকা পালন করেছিল

মদিনায়-কুরাইশীদের শত্রুতা

মদিনায় মুহাম্মদের আগমনের পূর্বে মদিনাবাসীরা বিভিন্ন যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। তাই মদিনাবাসীরা শান্তি পুনঃস্থাপনের উদ্দেশ্যে আব্দুল্লাহ ইবন্‌ উবাইকে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে। কিন্তু ইবন্‌ উবাই মুহাম্মদের আগমনে অখুশি হয়ে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে মেতে ছিল। মদিনায় মুহাম্মদের প্রতিষ্ঠার পর ইবন্‌ উবাইকে কুরাইশরা একটি চরমপত্র দিয়েছিল- যেন মুহাম্মদকে মদিনা থেকে বিতাড়িত করা হয় অথবা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সময় বনু আউস এর দলপতি সা'দ ইবন্‌ মু'আদ ওমরাহ্‌ করতে মক্কায় গিয়াছিলেন। পারস্পরিক বন্ধুত্বের কারণে মক্কার একজন প্রধান উমাইয়া ইবনে খালাফ ইবনে মুয়াদকে আশ্রয় ও পাহারার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু তবু-ও তারা ইসলামবিরোধী আবু-জাহলের নোটিসের কথা গোপন করতে পারল না। আবু জাহল রাগান্বিত হয়ে ইবনে সাদ-কে হুমকি দিল যেন তারা (মদিনাবাসী) ওমরাহ্‌ করতে মক্কায় আসা বন্ধ করে যেহেতু তারা মুহাম্মদকে আশ্রয় দিয়েছে। সাদ ইবনে মুয়াদ-ও তাদের কাফেলা সম্পর্কে হুমকি দিল।

এভাবেই মদীনাবাসী ও মক্কার কুরাইশ বংশীয়দের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হল। তখন পর্যন্ত মুসলিমরা সংখ্যায় অল্প, পর্যাপ্ত সম্পদের অভাব ও শত্রুদের আক্রমনের কারণে ভীত ছিল।

ইসলামী যুদ্ধের কারণ ও প্রস্তুতি

মক্কাবাসীরা মক্কায় আগত মুসলিম মুহাজিরদের সম্পত্তি দখল করে নেয়। কুরাইশরা নতুন মুসলিমদের উপর নির্যাতন শুরু করে এবং তাদের বাধ্য করে মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় হিজরত করতে।

1 like · 0 comments

Education

Do you want to manage your own group?

orange logo